সেই দিনগুলো ভালো ছিলো
মনটা বড়ো বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে ..
কিচ্ছুই আর ভালো লাগছে না...
মাঝে মাঝে মনে হয় সেই দিনগুলো ভালো ছিলো ..
যখন বাবা অফিস যাবে বলে মা ভোরে উঠে উনুন ধরিয়ে রান্না করতো ।
আমরা স্কুলে যাবো , তাই কত আদর করে ঘুম থেকে তুলে হাতে ব্রাশ দিয়ে দাঁড় করিয়ে দিতো, মা । চোখে তখনো ঘুম ...।
মনে পড়ে,
স্কুলে কিন্তু আমরা হেঁটেই যেতাম । বেশ খানিকটা দূর হলেও।
কারণ এত টাকা পয়সা ছিলোনা , রোজ রিকশা করে যাবো ।
স্কুল বাস বলে আমাদের কিছু ছিলোনা ।
স্কুল থেকে ফিরে মাঠে খেলতে যাওয়া ছিল । না, কোচিং ছিলোনা ।
খেলা থেকে ফিরে কিছু খেয়ে পড়তে বসা । ঘুমে চোখ বুজে আসছে ।
ইতিহাস না ভূগোল পড়ছি বুঝতাম না । এত ঘুম ।
ভাইবোনরা একসাথে পড়তে বসা । সবাই জোরে পড়ছে ।
সেই সময় সব বাড়ি থেকে সন্ধ্যায় বেশ একটা পড়ার আওয়াজ আসতো ।
মাঝে মাঝে মা রান্নাঘর থেকে, কি হলো, আওয়াজ আসছে না কেন !
আজকাল কেউ জোরে পড়ে না । সবাই মনে মনে ।
পড়ছে কি পড়ছে না বোঝার উপায় নেই ।
বাবা মা যখন পড়াতে বসতো ।
সেদিন অবশ্যই কান্নাকাটি । । তোর দ্বারা কিছু হবে না , এরকম ও শুনেছি ।
নাহ, আত্মহত্যার কথা মনে হয় নি ।
কারণ বকা-মার খাওয়াটা স্বাভাবিক ছিল ।
এখন তো শুনি, পরীক্ষার আগে পড়াশোনা না করলে , মা বাবা বকলে,
আত্মহত্যা করে বাচ্চারা ।
টিভি ছিল না । কিন্তু সেই নিয়ে কোনো দুঃখ ও ছিল না ।
আজকাল মোবাইল চেয়ে না পেলে আত্মহত্যা করে ।
আমার পাশের বাসায় একটা টিভি ছিল । পাড়া শুদ্ধ লোক সেই টিভি দেখতে আসতো । কৈ কাউকে তো দেখে মনে হয়নি, অখুশি !!!।
সবাই মিলে হৈচৈ করে টিভি দেখতাম ।
আর একটা জিনিস , লোডশেডিং। লোডশেডিং কি আমরা জানতামই না ।
বিকেলে ল্যাম্প মুছে তেল ভরে রাখতে হতো ”মা ”।
যখন বিদ্যুৎ এলো বাসায়...!!!
লোডশেডিং হলে ২ ঘন্টা ২ ঘন্টা অন্ধকার ।আর কত গল্প করতাম সবই মিলে।
যখন আলো আসতো, লাইট এসেছে লাইট এসেছে বলে একটা আওয়াজ উঠতো ।
বেশ মজা লাগতো ।
এখন power failure হয় ।
সাথে সাথে হাজার হাজার ফোন ।
বিদ্যুৎ অফিসের গাড়ি ।
ঠিক না হলে অফিস ভাঙচুর । বা বিদ্যুৎ কর্মীদের ধরে মার ।
কবে থেকে আমরা এত অস্থির হয়ে গেলাম !!!???
মজা লাগত
মাঝে মধ্যে জ্বর টর হলে,
না, বিরাট কোনো টেস্টের লিস্ট ছিল না ।
জিব দেখে, বড়ো করে হাঁ করো , আর স্টেথো দিয়ে বুক পিঠ, ব্যাস ওতেই পরীক্ষা শেষ ।
ডাক্তার ওষুধ লিখে দিতেন । খুব তেতো তেতো দুটো বা একটা ট্যাবলেট ।
সাথে হয়তো বা একটা মিষ্টি সিরাপ । সাথে মা-বাবা চকোলেট বা বিস্কুট হাতে দিতেই, তাতেই অসুখ উধাও ।
আজকাল আর ডাক্তার বাবুরা সামান্য জ্বর হলেও গুচ্ছের টেস্ট।
আর কত কঠিন কঠিন নাম । এই সব অসুখ কবে এলো !
প্রায় সব বাচ্চার ইনহেলার লাগে । কেন ?
খুব কঠিন অসুখ বোধহয় কম লোকেরই হতো ।
হাসপাতালে যাওয়া মানে বাচ্চা হওয়া বা খুব বয়স । এত ভিড় ছিল কি ?
জীবন বড়ো জটিল হয়ে গেছে ।
সাথে মানুষের মন...।
বড়ো অশান্তি চারদিকে....।
সেই কিছুই না থাকা কিন্তু শান্তির দিনগুলো কি আর আসবে না...!!!
সম্পূর্ন আমার বা আমাদের কথা.....
জানিনা .....
No comments:
Post a Comment
Please do not any spam in the comments Box.