সেকালের আড্ডা আর একালের আড্ডা
বাঙালি জাতি একটু সৌখিন, আরাম প্রিয় । বাঙালি জাতি মানেই আড্ডা প্রিয়,
আড্ডা পাগল বাঙালি । গল্প ও আড্ডা বাঙালি ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে ।
বাঙালি গল্প ও আড্ডায় বসলে তাদের খা ওয়া -দাওয়া ও অন্যান্য কাজ-কর্মের কথা কি ছুই মনে থা কেনা । বাঙালির আড্ডার মেজাজ নেই অন্য কোনো দেশে, কিংবা থাকলে ও
যথো চিত পরিবে শ নেই। অন্যান্য দেশের লোক বক্তৃতা দেয়, রসি কতা করে , তর্ক চালায়, নেশা করে ফূর্তি করে রাতকাটিয়ে দেয়, কিন্তু আড্ডা দেয় না ।
আমাদের ঋতুগুলো যেমন কবিতা জাগায়, তেমনই আড্ডা ও জমায়। আমাদের চৈত্রসন্ধ্যা , বর্ষার সন্ধ্যা , শরতের জ্যোৎস্না –ঢালা রাত্রি , শীতের মধুর উজ্জ্বল সকাল- সবই আড্ডার নীরব
ঘণ্টা বাজিয়ে যায়, কেউ শুনতে পায়, কেউ পায় না । বাঙালির মতো আড্ডার মেজাজ আর কোনো জাতির মানুষের মাঝে খুঁজে পাওয়া দুস্কর; তাই এ ভূ-সংসারে এমন কোনো বাঙালি
পাওয়া যাবেনা যে জীবনে একবারও আড্ডা দেয়নি ।
বাঙালির আড্ডার ইতি হাস বেশ প্রাচীন ।
বাংলার বিখ্যাত ব্য ক্তিদের আড্ডা নিয়ে কত মজার কাহিনী চালু রয়েছে তার কোনো ইয়ত্তানেই । বাংলার বহু জ্ঞানী -গুণী বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ
ছিলেন সে সব আড্ডার মধ্য মণি ।
সেই আড্ডা গুলো ছিল প্রাণোচ্ছ্বল ।
গ্রাম-বাংলায় গল্প আর আড্ডা দেওয়ার অনেক জায়গা রয়েছে ।
তেমনি এক জায়গার হচ্ছে মাচান। অতীতে এমন এক সময় ছিল যখন গ্রাম বাংলার মানুষ একটু সময় পেলেই মাচানে
বসে গল্প গুজব আর আড্ডায় মেতে উঠতো ।
প্রবীণ ব্যক্তিদের মুখে শৈ শবের নানা গল্প আর স্মৃতি চারণে জমে উঠতো এই মাচানে র আড্ডা । এমনকি গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা এবং বিচার সালিসও করা হতো এসব মাচানে বসেই ।
গল্প করা সাধারণত এসব কাজে র জন্যই সে সময় প্রায় প্রতিটি গ্রামের মানুষ মাচান তৈরীর উদ্যোগ নিত। কিন্তু প্রযুক্তি র যুগে পরিবর্তনের ধারায় মাচানে বসে গল্প করার সেই ঐতিহ্য
আর নেই ।
এখনকার গ্রামের মানুষেরা আড্ডা দেয় বাজারের চায়ের দোকানে চা খেতে খেতে আর টেলি ভি শন দেখতে দেখতে ।
অথচ অতীতে র সময় মুক্ত বাতাসে বসে এই মাচানে বিশ্রাম
নেওয়ার মজাই ছিল আলাদা।
আর আমরা আড্ডা দিয়ে থাকি ইট পাথরের চার দেয়ালে মাঝে বসে যাহাকে বলা হয়ে থাকে আধুনিক আড্ডা… ………………
No comments:
Post a Comment
Please do not any spam in the comments Box.